জেমস ওয়েবে বিস্ময়কর পিলার্স অব ক্রিয়েশন

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: দৈত্যকার ওরট মেঘের কুণ্ডলী। হাইড্রোজেন গ্যাস-ধুলায় তৈরি এই কুণ্ডলী দাঁড়িয়ে আছে অনেকটা স্তম্ভের মতো। তাতে সোনালি-বাদামি রঙের মিশেলে লাখো তারার ঝলকানি। মহাজাগতিক ওই কুণ্ডলীর নাম পিলার্স অব ক্রিয়েশন, মানে সৃষ্টির স্তম্ভ। এই স্তম্ভ তৈরি হয়েছে সাড়ে ৬ হাজার কোটি বছর আগে।

পিলার্স অব ক্রিয়েশনের এই ছবি তুলে এনেছে বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক ও শক্তিশালী টেলিস্কোপ জেমস ওয়েব। গত বছরের ডিসেম্বরে পৃথিবী থেকে মহাশূন্যে পাঠানো হয় টেলিস্কোপটি। বিস্ময়কর এই টেলিস্কোপ একের পর এক তুলে আনছে অনন্ত মহাবিশ্বের অতীত রহস্য।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা বুধবার জেমস ওয়েবের এই ছবি প্রকাশ করেছে।

নাসা জানিয়েছে, পিলার্স অব ক্রিয়েশনের অবস্থান মহাকাশের এম-১৬ অঞ্চলে, ঈগল নীহারিকার কেন্দ্রে। এই নীহারিকাটি ‘ঈগল নেবুলা’ নামেও পরিচিত। নীহারিকাটির অবস্থান পৃথিবী থেকে ৬ হাজার ৫০০ আলোকবর্ষ দূরে। অর্থাৎ আলোর গতিতে কোনো যানবাহন পৃথিবী থেকে রওনা দিলে পৌঁছতে লাগবে ৬ হাজার ৫০০ বছর।

নাসা জানায়, ‘পিলার্স অব ক্রিয়েশন’ হাইড্রোজেন ও ধুলোর তৈরি এক ধরনের ঘনীভূত মেঘ। তবে পৃথিবীর মেঘের মতো ক্ষণস্থায়ী নয় এরা। মূলত ঘনীভূত এই মেঘ থেকেই তৈরি হয় একেকটি নক্ষত্র। এই প্রক্রিয়ায় কোটি কোটি বছর লেগে যায়। নক্ষত্র থেকে জন্ম নেয় অসংখ্য গ্রহ-উপগ্রহ। সেগুলোও ক্রমে ক্রমে শীতল হয়। এজন্য বলা যায়, নক্ষত্রের আদি ও প্রাথমিক অবস্থা হচ্ছে এই পিলার্স অব ক্রিয়েশন।

এ বিষয়ে ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা অধ্যাপক মার্ক ম্যাককোরেন বলেন, ১৯৯০-এর দশক থেকে ‘ঈগল নেবুলা’ নিয়ে গবেষণা করছি আমরা। নবগঠিত নক্ষত্রের সন্ধান পাওয়ার জন্য চেষ্টা করছি এসব পিলার্স দেখতে। অবশেষে এটা দেখিয়েছে জেমস ওয়েব।

তিনি বলেন, আমি জানতাম, জেমস ওয়েবের তোলা ছবিগুলো তাক লাগানো হবে; হয়েছেও তাই। এগুলোকে আমরা দেখতে পাচ্ছি এখন, তবে সেটি সাড়ে ছয় হাজার কোটি বছর আগের এক অতীত। জেমস ওয়েব নিজের আয়নায় অতীতের আলোকে ধরেই তৈরি করেছে এই চিত্র।

 

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন