১ লাখ কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে শুরু হলো বিপিও সামিট ২০২৩

টেকভিশন২৪ প্রতিবেদক: দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কীভাবে দেশের সীমানা পেরিয়ে বৈশ্বিক পর্যায়ে বিজনেস আউটসোর্সিংসহ এই খাতের নতুন বাজার খুঁজে সর্বোত্ত প্রযুক্তি সেবা দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত কওে আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে শুরু হলো পঞ্চম ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৩’।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘প্রযুক্তি খাতে এগিয়ে নেওয়ার বিপিও সেক্টর গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। ৩০০ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ৭০ হাজার লোক মানুষ এ সেক্টরে কাজ করছে। এবার বিভাগীয় পর্যায় বিপিও সামিট আয়োজন করার ফলে সারাদেশের তরুণরা এ সেক্টরে কাজ করতে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। বিপিও কথাটি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। তাহলে মানুষ বিপিও সেক্টরে আগ্রহ দেখাবে। সাধারণ মানুষকে জানাতে হবে কিভাবে বিপিও সেক্টরের সাধারণ মানুষ আর্থিক ভাবে লাভবান হবে। এই সেক্টরে কাজ করার ফলে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করার সুযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি।

শিরীন শারমিন চৌধুরী আরও বলেন, ‘বিপিও সেক্টরের নারীদের সুযোগ করে দিতে হবে। কারণ এ কাজটি যেকোন জায়গা থেকে সুযোগ রয়েছে। বিপিও সেক্টরের নারী ঘরের বসেও করতে পারবে। তাই নারীরা এ খাতে ভালো করা সুযোগ রয়েছে।’

এআই বিশ^ব্যাপী আলোচিত বিষয়, এটাই বাস্তবতা জানিয়ে শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, এআই নানা ভাবে আমাদের জীবকে প্রভাবিত করবে। তবে এআই পিছনের মানুষের অবদান রয়েছে। তাই মানুষের গুরুত্ব কখনেই কমবে না। এআই আসার ফলে সাধারণ মানুষের কাজ কমে যাবে, এটা ঠিক না। এআই যে সেক্টরে কাজ করবে সে সেক্টরের মানুষকে নতুন ভাবে দক্ষ করে তুলতে হবে। বর্তমানে কৃষি ক্ষেত্রে ধান কাটার জন্য লোক পাওয়া যায় না। এখণ কিন্তু মেশিনের মাধ্যমে ধান কাটা হচ্ছে। যেখানে প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব সেখানে কাজে লাগতে হবে। প্রযুক্তিকে গ্রহণ করতে হবে, না হলে আমার বিশে^র অন্য দেশ থেকে পিছিয়ে পরবো। আমাদের দেশের তরুণরা দ্রæত শিখতে পারে। তাই তাদের কাছে আধুনিক প্রযুক্তিগুলো পৌঁছে দিতে হবে।’

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ বলেন, বিপিও সেক্টর গড়ে তোলার জন্য সবার আগে দরকার ইন্টারনেট। আমরা সারাদেশে ইন্টারনেট পৌঁছে দিয়েছি। প্রতি ঘরে ঘরে বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। বিপিও সেক্টরে বাংলাদেশ আজ বিশে^র মাঝে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ। সারাদেশে ৭ হাজার আইটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২০ লাখ তরুণ তরুণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে সরকার।
জুনায়েদ আহমেদ আরও বলেন, আমরা প্রাইমারি থেকে কোডিং শেখানো কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। এর ফলে প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন একটা জাতি তৈরি হচ্ছে। তাই প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য সারাদেশে প্রাইমারি স্কুলে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রাইমারি স্থাপন করা হবে।
তরুণদের প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়ানোর জন্য অনেকগুলো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে সরকার জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৬৪টি জেলায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং সেন্টার তৈরি করা হবে। যার যার জেলা বসে প্রযুক্তিতে দক্ষ হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ পাচ্ছে তরুণরা। তারা ঢাকাতে না এসে নিজের গ্রামে বসেই নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। আমরা যতগুলো প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছি সে সাফল্য দেশ পেতে শুরু করেছে। সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে এক লাখ প্রশিক্ষণ দিবে জানিয়ে তিনি বলেন, তরুণদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে ২০২৫ সালের মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলার আয় করতে চাই। এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করতে চাই। ১ লাখ ৯ হাজার হাইস্পিড সংযোগ আগামী ছয় মাসের মধ্যে সারাদেশে পৌঁছে দিতে পারবো।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ, আইসিটি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিন, আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মোস্তফা কামাল ও বাক্কো সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন প্রমুখ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৮ বিভাগের অনুষ্ঠিত বিপিও সামিট সফল আয়োজনের জন্য বিভাগীয় কমিশনারকে সম্মাননা প্রধান করা হয়। এই সম্মেলন আগামীতে জেলা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা উঠে আসে। এছাড়াও বর্ষসেরা বিপিও ব্যক্তি পুরস্কার পান ডেটা এন্ট্রি করা নাজমুল হক মোল্যা। একইভাবে প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে ইগনাইট, সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেড ও জেনেক্স ইনফোসিসকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন