বেসিসের সাবেক সভাপতির ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের দুঃখ প্রকাশ

আসছে বেসিস নির্বাচন ২০২৪-২৬ এ এরই মধ্যে হয়ে উঠেছে প্রতিযোগীতা মূলক। তিন প্যানেলে মোট ৩৩ জন পার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন। এই তিন প্যানেলের মধ্যে একটি প্যানেলকে সমর্থন দিয়ে বিপাকে পড়েছেন বেসিসের সাবেক সভাপতি মাহবুব জামান। এছাড়াও বেসিস মেম্বার্স প্ল্যাটফর্ম নামে ফেসবুকের যে ক্লোজড গ্রুপে তিনি তার মতামত তুলে ধরে ছিলেন সেখান থেকে তাকে বেরও করে দেওয়া হয়েছে। আসন্ন ভোটেও এই বিষয়ের এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন অনেকেই।

৪ মে, ২০২৪ শনিবার বেসিস মেম্বার্স প্ল্যাটফর্ম গ্রুপে সংগঠনের ২০১০-১২ কমিটির সভাপতি মাহবুব জামানের সঙ্গে এমন অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে।

দেশের তথ্য প্রযুক্তিখাতে উদ্যোক্তাদের জন্য অবদান রাখা মাহবুব জামান সেদিন বেসিস মেম্বার্স প্ল্যাটফর্ম গ্রুপে লেখেন – “গত কয়েক দিনে আমি অনেক টেলিফোন পাচ্ছি যেখানে সবাই জানতে চানি আমি ‘কোন পক্ষ’ নিলাম।
তার লেখায় সুস্পস্ট হয়ে ওঠে, প্রতিদ্বন্দ্বী সব পক্ষের সঙ্গে তার খুবই পরিচিত ও ঘনিষ্ট। তবে অত্যন্ত প্রিয়জন এবং কয়েকজন আবার স্নেহভাজন আছেন। এমন কি তিনি এও বলেন যে, টিম স্মার্ট তার কাছে আসেনি, বরং তিনিই টিম স্মার্টের কাছে গিয়েছেন।

এর কয়েকটা কারণ ব্যাখ্যা করেন মুক্তিযোদ্ধা এই সাবেক ছাত্র নেতা। প্রথম কারণ হিসেবে তিনি বলেন, টিম স্মার্টের অধিকাংশই বয়সে তরুণ – যেটা অনেকে মনেকরেন তাদের দূর্বলতা। তবে সাবেক বেসিস নেতা মনে করেন, তার বিবেচনায় এটাই টিম স্মার্টের বড় শক্তির জায়গা।

“এই প্যানেলের সবাই ইন্ড্রাস্ট্রির প্রতিদিনের কাজের সাথে যুক্ত আছে। ফলে সমস্যাগুলোকে এরা ভালো বোঝে” – এটাকে দ্বিতীয় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।

মাহবুব জামান বলেন, এই প্যানেলটির সবাই কাটিং এজ টেকনোলজির প্রতিটি ফিল্ডে কাজ করছে। এআই, আইওটি, ডেটা অ্যানালিসিস, রোবটিক্স এমন নানান উন্নততর প্রযুক্তি এদের কাজের ক্ষেত্র। এমন পোস্ট দেওয়ার পরে বেসিস মেম্বার্স প্ল্যাটফর্ম গ্রুপের অ্যাডমিন থেকে বেসিসের এই সিনিয়র নেতাকে রিমুভ করে দেওয়া হয়। এমনকি তার পোস্টও রিমুভ করে দেওয়া হয়।

বিষয়টি নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে বেসিস মেম্বার্স প্ল্যাটফর্ম গ্রুপে নানান মতামত আসতে থাকে। সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার জন্যে দুঃখ প্রকাশ করে রোববার মাহবুব জামানকে ফোনও করেছিল বেসিসের সেক্রেটারিয়েট। টিম স্মার্টকে সমর্থন দেয়ার কারনে আক্রমণের শিকার হওয়ায় এই বিষয়ে মাহবুব জামান আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

অপরদিকে পুরো বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ ব্যাখ্যা দিয়েছে বেসিস নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান টিআইএম নূরুল কবির, সদস্য সৈয়দ মামনুন কাদের এবং নাজিম ফারহান চৌধুরী সদস্যদের উদ্যেশে লেখা বার্তায় জানিয়েছেন, বেসিস মেম্বার্স প্লাটফর্মটিতে কিছু পোস্ট নির্বাচন প্রক্রিয়া ২০২৪-২৬ এর সুষ্ঠু কার্যকারিতায় যেনো হস্তক্ষেপ করতে না পারে সেজন্য বেসিস সদস্যভুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বর্তমানে সংশ্লিষ্ট নন; অর্থাৎ সকল অ-সদস্যদের সরিয়ে দিতে বেসিস সচিবালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো। ফলস্বরূপ, বেসিস প্রাক্তন সভাপতি জনাব মাহবুব জামান মেম্বার্স প্ল্যাটফর্ম থেকে বাদ পড়েছিলেন। কারণ, তিনি এখন বেসিসে কোনো কোম্পানির প্রতিনিধিত্ব করেন না। এছাড়াও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কিছু সদস্য প্ল্যাটফর্মের সদস্য নন এবং এর অস্তিত্ব সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। তবে বিষয়টি অবগত হওয়ার পর সাবেক সভাপতি হিসেবে তাকে আবার ফিরিয়েও নিয়েছে।

সৈয়দ মামনুন কাদির এর পোস্ট থেকে জানাগেছে, অংশগ্রহণ মূলক এবং সবার জন্য সমান পরিবেশ সৃষ্টি করতেই নির্বাচন কমিশনের পক্ষে জনাব মাহবুবের সঙ্গে কথা বলে প্রশাসনিক নিয়ম মেনে চলার মধ্য দিয়ে যে অনিচ্ছাকৃত ঘটনা ঘটেছে তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে একটি অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং প্রক্রিয়ায় সকলের আন্তরিক অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন