টেকভিশন২৪ ডেস্ক: বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাদ দিয়ে তার পরিবর্তে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ’ নামে একটি আইন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ’-এর খসড়া গতকাল অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাদ দিয়ে তার পরিবর্তে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ’ নামে একটি আইন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ’-এর খসড়া গতকাল অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এতে সাইবার নিরাপত্তা আইনের নয়টি ধারা বাদ দেয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে প্রথমবারের মতো ইন্টারনেটকে নাগরিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া অনলাইন জুয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গতকাল ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ’-এর এ খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন সাইবার সিকিউরিটি আইন কার্যকর হবে। নতুন আইনে পুরনো আইনের নয়টি ধারা থাকছে না। নতুন সংশোধিত আইনের যেদিন গেজেট প্রকাশ হবে তার আগের দিন পর্যন্ত এসব ধারায় দায়ের করা সব মামলা বাতিল হয়ে যাবে।’
আইন উপদেষ্টা জানান, যেসব বিধান বিলুপ্ত করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকাসংক্রান্ত বিদ্বেষ, বিভ্রান্তি ও কুৎসামূলক প্রচারণার দণ্ডসংক্রান্ত বিধান। তিনি বলেন, ‘এ বিধানে প্রচুর হয়রানিমূলক মামলা হতো। অনেক সাংবাদিকও এর ভিকটিম হয়েছেন। এটা বাতিল করা হয়েছে।’
আরো কিছু ধারার মামলা বাতিল হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আরো কিছু ধারার মামলা বাতিল হয়ে যাবে, যেমন সাইবার সন্ত্রাসী কার্য ও সংগঠনের অপরাধ ও দণ্ড, পরিচয়ের প্রতারণা ও ছদ্মবেশ ধারণের অপরাধ ও দণ্ড। ধারাটা আছে, তবে সংজ্ঞাটা এমনভাবে পরিবর্তন হয়েছে যাতে আগের ধারার মামলা আর টিকে থাকবে না।’
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘নতুন আইনে স্পিচ অফেন্স বা কথা বলে কিংবা মতামত প্রকাশ করে যে অপরাধ তার সব জামিনযোগ্য করা হয়েছে। নতুন সাইবার সিকিউরিটি আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি দুই বছর। কেউ মিথ্যা মামলা করলে এবং তা প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার বিধান রাখা হয়েছে।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘সাইবার সিকিউরিটি কাউন্সিল আছে। তারা যখন আক্রমণাত্মক বা অপরাধমূলক কোনো কনটেন্ট অপসারণ করবে, সেটার জন্য যে অথরিটি স্টাবলিশ করা হয়েছে সেই অথরিটিতে সিভিল সোসাইটি মেম্বার থাকবে। এ অথরিটি কোনো কনটেন্ট অপসারণ করার পর পরই ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আদালতের অনুমতি নিতে হবে। যে কনটেন্ট অপসারণ করা হবে সে ব্যাপারে জনগণকে জানাতে হবে।’
পরিষদ সিভিল প্রসিডিউর অ্যাক্টের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘এর ফলে মামলা নিষ্পত্তি নিয়ে বছরের পর বছর আদালতে চক্কর কাটতে হবে না। দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হবে।’