নগদের ৪১ পরিবেশক, ২৪ হাজার এজেন্ট ও ৬৪৩ কর্মকর্তা বরখাস্ত

টেকভিশন২৪ ডেস্ক: মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান ‘নগদ লিমিটেড’ গুরুতর আর্থিক অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংকে জমা টাকার অতিরিক্ত ৬৪৫ কোটি টাকার ই-মানি তৈরি এবং অনুমোদনবিহীন পরিবেশকের মাধ্যমে ১ হাজার ৭১১ কোটি টাকা উত্তোলনের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। এ ঘটনায় ৪১ পরিবেশক, ২৪ হাজার এজেন্ট এবং ৬৪৩ বিক্রয় কর্মকর্তা বরখাস্ত হয়েছেন। খবর প্রথম আলো।

জালিয়াতি ও এর পরিণতি

ডাক অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে মামলা দায়েরের বিষয়ে টানাপোড়েন চলছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসক জানান, নগদ লিমিটেড ব্যাংকে জমাকৃত টাকার বিপরীতে অতিরিক্ত ই-মানি ইস্যু করেছে। এটি ডিজিটাল আর্থিক জালিয়াতির অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া অনুমোদন ছাড়াই ৪১ পরিবেশকের মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের টাকা তোলা হয়েছে।

পরিদর্শনের পর ২৪ হাজার ৯৭ এজেন্ট এবং ৩ হাজার ৮৩১টি মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি গ্রাহকদের অনিয়মিত অ্যাকাউন্ট হালনাগাদ এবং স্থগিত করা হয়েছে।

প্রশাসনের ভূমিকা

২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত নগদ লিমিটেড আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিশেষ সুবিধা পায়। ২০২৪ সালের আগস্টে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক নগদে প্রশাসক নিয়োগ দেয়। এরপর বড় আকারের জালিয়াতির ঘটনা উদঘাটিত হয়। ১৮ নভেম্বর প্রশাসক ডাক অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ব্যাংককে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।

ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ

নগদের আর্থিক লেনদেনের ফরেনসিক নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জালিয়াতি ও সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।

লেনদেনের বৃদ্ধি

বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপের পর নগদের লেনদেন বৃদ্ধি পেয়েছে। নভেম্বর মাসে দৈনিক লেনদেন এক হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। বর্তমানে গ্রাহক সংখ্যা সাড়ে ৯ কোটি অতিক্রম করেছে।

নগদের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, প্রশাসনের পদক্ষেপ গ্রাহকের আস্থা পুনরুদ্ধার করেছে, যার ফলে নতুন গ্রাহক ও লেনদেন উভয়ই বাড়ছে।

এই ঘটনাটি বাংলাদেশের ডিজিটাল আর্থিক সেবায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত প্রদান করে, যেখানে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কার্যকর তদারকি অপরিহার্য।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন