টেকভিশন২৪ ডেস্ক: টেলিযোগাযোগ খাতের নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং কাঠামো সংস্কারের অংশ হিসেবে দ্বিতীয় পরামর্শমূলক কর্মশালার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর আগারগাওস্থ বিটিআরসি ভবনে অনুষ্ঠিত উক্ত কর্মশালায় বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো: এমদাদ উল বারী বলেন, প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে, তাই নতুন প্রযুক্তির সাথে আমাদেরকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। ডিজিটাল সেবাকে প্রাধান্য দিয়ে নেটওয়ার্ক টপোলজি পরিবর্তন করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কানেক্টিভিটির সুফল আমরা ইতিমধ্যে ভোগ করছি তাই প্রযুক্তিকে বিভিন্ন ব্যবসা ও সেবায় কাজে লাগানোর দিকে নজর দিতে হবে। টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক কাঠামোকে সহজ ও সাশ্রয়ী হতে হবে উল্লেখ করে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, প্রস্তাবিত সংস্কার সকলের স্বার্থ কিছু ক্ষেত্রে পূরণ নাও করতে পারে, কিন্তু দেশের মানুষের সুলভ মূল্যে মানসম্মত সেবা প্রাপ্তি এবং দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির অধিকাংশ স্টেকহোল্ডারের সমর্থন নিয়ে সংস্কার বাস্তবায়ন করা হবে।
স্বাগত বক্তব্যে বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড অপারেশন্স বিভাগের কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ইকবাল আহমেদ বলেন, বৃহত্তর স্বার্থ ও গ্রাহকের দৃষ্টিকোণকে প্রাধান্য দিয়ে টেলিযোগাযোগ খাতের সংস্কার করা হবে এবং সংস্কারের ক্ষেত্রে বিদ্যমান লাইসেন্সিদের ব্যবসায়িক রুপান্তর কেমন হবে সে বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হবে ।
প্রস্তাবিত সংস্কারে টেলিযোযোগাযোগ খাতের লাইসেন্সিসমূহকে সম্ভাব্য তিনটি স্তরে ভাগ করা হয়েছে । এতে গ্রাহক পর্যায়ে সেবাদানকারী হিসেবে (Access service Providers); জাতীয় পর্যায়ে কানেক্টিভিটি সেবাদানকারী হিসেবে National Connectivity Service Providers এবং আন্তর্জাতিক কানেক্টিভিটি সেবা প্রদানকারী হিসেবে International Connectivity Service Providers ক্যাটাগরিতে লাইসেন্স প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করা হয়েছে।
গ্রুপভিত্তিক আলোচনায় গ্রাহক পর্যায়ে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে অপারেটরগণ একটিভ শেয়ারিং, লাস্টমাইল কানেক্টিভিটিতে নিজস্ব ফাইভার স্থাপন, নতুন প্রযুক্তি ও প্ল্যাটফর্মের জন্য নমনীয় রেগুলেশন বিষয় উল্লেখ করেন। একইসাথে একটিভ শেয়ারিং, ওপেন লাইসেন্স পলিসি, ব্যান্ডউইথ মূল্য রেগুলেশন, লাস্টমাইল কানেক্টিভিটি ,ওপেন একসেস ট্রান্সমিশন ইত্যাদি বিষয়ে মতামত উপস্থাপন করেন।
জাতীয় পর্যায়ে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় লেয়ার বাদ দেওয়া, প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি, ওপেন মর্কেট একসেস, যথাযথ মনিটরিং, ট্যাক্স পলিসি ও রেভিনিউ শেয়ারিং পুর্নবিবেচনা, কোয়ালিটি ভিত্তিক সার্ভিস পলিসি প্রণয়ন, অবকাঠামো শেয়ারিং, স্বচ্ছ ট্যারিফ পলিসি চালু এবং স্বল্প সময়ে প্রস্তাবিত সংস্কার চালুর বিষয়ে মতামত উপস্থাপন করা হয়।
আন্তর্জাতিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য অবকাঠামো শেয়ারিং, ট্যারিফ নির্ধারণ, সকল লাইসেন্সিকে সকল রুটে সেবা প্রদানের সুযোগ, টেলিকম পলিসির সাথে আইসিটি আইনসহ অন্যান্য আইনের সামঞ্জস্যতা, ডাটা সেন্টার ডিরেগুলেশন, পার্শবর্তী দেশ ও অঞ্চলে সেবা দেওয়ার সুযোগ এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে জয়েন্ট ভেঞ্চার,, বৈদেশিক বিনিয়োগ, কনসোর্টিয়াম গঠনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
কর্মশালায় অন্যান্যদের মধ্যে বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার জনাব মাহমুদ হোসেন, সিস্টমেস্ এন্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খলিল উর রহমান, বিটিআরসির উধ্বর্তন কর্মকর্তাবৃন্দসহ বাংলাদেশ ব্যাংক, ন্যাশনাল টেলিকম মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি), আর্মড ফোর্সেস ডিভিশন, টেলিযোযোগাযোগ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস লিমিটেড, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিটিটেড (বিটিসিএল), বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি), মোবাইল অপারেটর, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি), আইজিডব্লিউ অপারেটরস ফোরাম অব বাংলাদেশ, অ্যাসোসিয়েশন অব আইসিএক্স অপারেটরস বাংলাদেশ, টাওয়ার কোম্পানি, ন্যাশনওয়াইড টেলিকম ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন), ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জ (আইসিএক্স), ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি), ন্যাশনাল ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ (নিক্স), টাওয়ার অপারেটর, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো) এর প্রতিনিতিবৃন্দসহ বুয়েট, এমআইএসটি, নর্থ-সাউথ, ব্র্যাক ইত্যাদি বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞগণ উপস্থিত ছিলেন।